বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলার সম্পূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বিকাশ এখন অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম। এটি ব্যবহার করে সহজেই টাকা লেনদেন, বিল পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জ, ই-কমার্স পেমেন্ট, সঞ্চয় এবং আরও অনেক কিছু করা যায়। বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য বিস্তারিত নির্দেশাবলী নিচে ধরা হলো।
বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য কি কি প্রয়োজন তা জেনে নিন।
- আপনার একটি সচল মোবাইল সিম থাকতে হবে যে সিমে বিকাশ অ্যাকাউন্ট নেই। আপনি গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি, বা টেলিটক সকল সিম বিকাশ অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন।
- জাতীয় পরিচয়পত্রের মূল কপি
- একটি স্মার্টফোন থাকলে, আপনি বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। যদি না থাকে, তবে এজেন্ট পয়েন্টের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন।
বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম:
প্রথমে বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করুন: Google Play Store বা Apple App Store থেকে bKash App ডাউনলোড করুন।
অ্যাপটি ডাউনলোড ও ইনস্টল করার পর এটি ওপেন করুন।
বিকাশ সাইন আপ প্রক্রিয়া শুরু করুন।
- বিকাশ অ্যাপে গিয়ে লগইন/রেজিস্টার-এ ট্যাপ করুন।
- অপারেটর বেছে নিয়ে আপনার মোবাইল নাম্বারটি দিন।
- মোবাইল নাম্বারে পাঠানো ভেরিফিকেশন কোড দিয়ে পরের ধাপে যান।
- শর্তাবলি পড়ে সম্মতি দিয়ে সামনে এগিয়ে যান।
- আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের সামনের ও পেছনের অংশের ছবি তুলুন।
- প্রয়োজনীয় তথ্য চেক করে এগিয়ে যান।
- ফোনের ক্যামেরা দিয়ে নিজের চেহারার ছবি তুলুন।
- এবার তথ্য সাবমিট করে এগিয়ে যান।
ভেরিফিকেশনের কনফার্মেশন এসএমএস-এর জন্য অপেক্ষা করুন। এই তথ্য যাচাই করতে বিকাশ-এর ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। আপনার দেওয়া তথ্য যাচাই করা হবে। যাচাই সফল হলে আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্ট এক্টিভ হয়ে যাবে। কনফার্মেশন এসএমএস পাওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পিন সেট করতে হবে। পিন সেট করতে অ্যাপে এসে ‘পিন সেট করুন’-এ ট্যাপ করে ৫ সংখ্যার পিন দিয়ে নিশ্চিত করুন।
বিকাশ ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন পয়েন্টে ই-কেওয়াইসির মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট খুলুন: ই-কেওয়াইসির মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট খুলে কি কি লাগবে?
- আপনার একটি সচল মোবাইল সিম থাকতে হবে যে সিমে বিকাশ অ্যাকাউন্ট নেই
- জাতীয় পরিচয়পত্রের মূল কপি
পদ্ধতি:
১। এজেন্ট আপনার মোবাইল নাম্বার ও অপারেটর নিশ্চিত করে একাউন্ট খোলার জন্য অনুমতি নেবেন।
২। আপনার নাম্বারে পাঠানো রেফারেন্স নাম্বারটি নেবেন।
৩। আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের সামনের ও পেছনের অংশের ছবি তুলবেন।
৪। এজেন্ট ই-কেওয়াইসি এন্ট্রির জন্য আপনার একটি ছবি তুলবেন।
৫। সফল রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে আপনি একটি কনফার্মেশন এসএমএস পাবেন।
বিকাশ এজেন্ট পয়েন্টে কেওয়াইসি ফর্ম পূরণ করে বিকাশ একাউন্ট খুলুন:
- আপনার একটি সচল মোবাইল সিম থাকতে হবে যে সিমে বিকাশ অ্যাকাউন্ট নেই
- জাতীয় পরিচয় পত্র (মূল এবং ফটোকপি)
- ১ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি
বিকাশ গ্রাহক সেবায় বিকাশ একাউন্ট খুলুন:
- আপনার একটি সচল মোবাইল সিম থাকতে হবে যে সিমে বিকাশ অ্যাকাউন্ট নেই
- জাতীয় পরিচয়পত্র (ফটোকপি) / ড্রাইভিং লাইসেন্স (মূল এবং ফটোকপি) / পাসপোর্ট (মূল এবং ফটোকপি)
- ১ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি
বিকাশ গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে বিকাশ একাউন্ট খুলুন:
- আপনার একটি সচল মোবাইল সিম থাকতে হবে যে সিমে বিকাশ অ্যাকাউন্ট নেই
- জাতীয় পরিচয়পত্র (মূল এবং ফটোকপি)/ মূল ড্রাইভিং লাইসেন্স / মূল পাসপোর্ট
- কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি
একাউন্ট ওপেনিং ফরমটি পূরণ করুন এবং আপনার বৃদ্ধাঙ্গুলির ছাপ ও স্বাক্ষর দিন।
বিকাশ একাউন্ট খোলার পর আপনাকে আপনার বিকাশ মোবাইল মেন্যুটি অ্যাক্টিভেট করে নিতে হবে।
আপনার মোবাইল বিকাশ মেন্যু অ্যাক্টিভেট করতে নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করুন:
- *২৪৭# ডায়াল করে বিকাশ মোবাইল মেন্যুতে যান।
- “অ্যাক্টিভেট মোবাইল মেন্যু” বেছে নিন।
- বিকাশ একাউন্টের জন্য ৫ ডিজিটের পিন নাম্বারটি প্রবেশ করান
- কনফার্ম করার জন্য আপনার পিন নাম্বারটি আবার প্রবেশ করান
- আপনার পিন নাম্বারটি সব সময় গোপন রাখুন
বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলা হলে আপনি নানান সুবিধা পেতে পারেন, যেমন:
- টাকা পাঠানো ও গ্রহণ করা: বাংলাদেশের যেকোনো জায়গায় দ্রুত টাকা পাঠানো বা গ্রহণ করা।
- মোবাইল রিচার্জ: গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি, বা টেলিটক নম্বরে রিচার্জ করা।
- ইউটিলিটি বিল পরিশোধ: বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি এবং ইন্টারনেট বিল পরিশোধ।
- ই-কমার্স পেমেন্ট: বিভিন্ন অনলাইন শপে সহজে পেমেন্ট করা।
- সঞ্চয় এবং ঋণ সুবিধা: বিকাশের মাধ্যমে সঞ্চয় জমা রাখা এবং ঋণ নেওয়ার সুবিধা।
- নিরাপত্তা ও সহজলভ্যতা: ২৪/৭ সেবা এবং পিনের মাধ্যমে ট্রানজ্যাকশন নিরাপদ রাখা।
বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলার পর সতর্কতা
- আপনার পিন কোড কারও সাথে শেয়ার করবেন না।
- প্রতিটি লেনদেনের জন্য নিশ্চিতকরণ বার্তা চেক করুন।
- কোনো সমস্যা হলে বিকাশের কাস্টমার কেয়ার হটলাইন ১৬২৪৭-এ যোগাযোগ করুন।
- বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য কোনো ফি নেওয়া হয় না।